Dhaka ০১:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বে টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরু অক্টোবরে

Reporter Name
  • Update Time : ০২:১৭:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৪৪ Time View

[ad_1]

নিজস্ব প্রতিবেদক »

ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি বে-টার্মিনাল নির্মাণ। সময়ের সঙ্গে তা চট্টগ্রাম বন্দরের প্রয়োজনে রূপান্তর হয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি ও রপ্তানি বহুগুণ বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছে তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে। তাই চট্টগ্রাম বন্দরকেও আগামীর বাণিজ্য সম্প্রসারণে প্রস্তুত হতে হচ্ছে বলে জানান চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। এ ধারাবাহিকতায় অক্টোবরে শুরু হচ্ছে বে-টার্মিনাল নির্মাণের কাজ।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বন্দর চেয়ারম্যান এ তথ্য জানান।

তিনি প্রস্তুতি হিসেবে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের পাশাপাশি বন্দরে বেশকিছু টার্মিনাল ও শেড নির্মাণের কথা বলেন।

চবক চেয়ারম্যান বলেন, ‘অক্টোবরে শুরু হচ্ছে বে টার্মিনাল নির্মাণের কাজ। সেখানে বেশ কিছু চ্যানেল তৈরি করা হবে। এমনিতে ওখানের ড্রাফট রয়েছে প্রায় ১২ মিটার। জোয়ার-ভাটা হিসেব করে ১৪ মিটারের জাহাজ ভেড়ানো হবে। বে টার্মিনাল তৈরি হওয়ার পাশাপাশি প্রস্তুত রয়েছে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল এবং বেশ কিছু টার্মিনাল ও শেড তৈরি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে সিঙ্গাপুর বন্দরের মতো আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর।’

চট্টগ্রাম বন্দর আধুনিকায়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বন্দরের সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একসময় বন্দর সদরঘাট ও আশপাশের এলাকা পর্যন্ত ছিল। বর্তমানে তা সম্প্রসারিত হয়ে কক্সবাজারের মাতারবাড়ি পর্যন্ত পৌঁছেছে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ হলে হ্যান্ডলিং করা যাবে ১ লাখ টন ওজনের পণ্যবাহী কার্গো এবং ১০ হাজার টিইইউস কনটেইনারবাহী জাহাজ।’

‘গত এক যুগে বন্দরে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ইউরোপের সঙ্গে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, বহির্নোঙরের আওতা বৃদ্ধি, ভিটিএমআইএস, ডিজিটালাইজেশন, কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের অত্যাধুনিক কী গ্যান্ট্রি ক্রেন সংযোজন উল্লেখযোগ্য। আমাদের এখন লক্ষ্য আঞ্চলিক পণ্য পরিবহনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হওয়া।’

বন্দর ইকুইপমেন্টের দিক থেকে অনেক বেশি সমৃদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘২০২২-২৩ সালে ২টি ৫০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন মোবাইল ক্রেন, ২টি ১০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন মোবাইল ক্রেন, ৬টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন ৩৪টি কিউজিসি এবং ২টি কন্টেইনারে মোভার বন্দরের বহরে যুক্ত হয়েছে। প্রায় ৯১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৪টি ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন বহরে যুক্ত হওয়ায় বর্তমানে ১৮টি গ্যান্ট্রি ক্রেন ফ্লিটে রয়েছে। এছাড়া বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ৬ লাখ বর্গমিটার ইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এ ইয়ার্ডসমূহে কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতা ৪৯ হাজার ১৮ টিইইউস থেকে ৫৩ হাজার ৫১৮-তে উন্নীত হয়েছে । লালদিয়ার চর থেকে ৫২ একর জায়গা উদ্ধার করে সেখানে কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বন্দরে কেমিক্যাল শেড তৈরি করা হচ্ছে এবং মালটিপারপাস কার শেড তৈরি করা হয়েছে।’

চট্টগ্রামবাসীকে কর্ণফুলীকে বর্জ্যমুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরের অনেক বর্জ্য কর্ণফুলী নদীতে পড়ে। এ কারণে নদীর গভীরতা দিন দিন কমছে। অনেক বর্জ্য আমরা সরিয়েছি। এটি প্রাকৃতিক চ্যানেল। আগামী বছরের মধ্যে ১১ মিটার বা সাড়ে ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বন্দর জেটিতে ভেড়ানো সম্ভব হবে আশা করি। এ জন্য নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে। নয়তো চট্টগ্রাম বন্দরে বড় জাহাজ আসতে পারবে না। বড় জাহাজ ভিড়তে না পারলে ব্যবসায়ীরা পরিবহন খরচ কমাতে পারবে না। এতে বেশি দামে জিনিস কিনতে হবে। যা পুরোপুরি চট্টগ্রামবাসীর জন্য ক্ষতি।’

চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের ১০০টি বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের স্থান এখন ৬৪তম। তাই চট্টগ্রাম বন্দরও আন্তর্জাতিক বন্দরের নীতি অনুসারে চলবে। এখানেও প্রাইভেট অপারেটর নিয়োগ হবে তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা যাচাইয়ের মাধ্যমে। একইসঙ্গে নতুন প্রযুক্তি আসবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে। অনেক দেশ আমাদেরকে অনুরোধ করে চট্টগ্রাম বন্দর যাতে তাদের সঙ্গে কাজ করে। এটি খুবই সন্তোষজনক বিষয় যে, বিদেশি অনেক বিনিয়োগকারী চট্টগ্রাম বন্দরে বিনোয়াগ করতে আগ্রহী। অর্থাৎ আমরা সবার আকর্ষণের একটি জায়গায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি।’

মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য শহীদুল আলম, সচিব ওমর ফারুক, পরিচালক (প্রশাসন) মমিনুর রশিদসহ সংস্থাটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

[ad_2]

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
.design-developed a { text-decoration: none; color: #000000; font-weight: 700;

বে টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরু অক্টোবরে

Update Time : ০২:১৭:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩

[ad_1]

নিজস্ব প্রতিবেদক »

ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি বে-টার্মিনাল নির্মাণ। সময়ের সঙ্গে তা চট্টগ্রাম বন্দরের প্রয়োজনে রূপান্তর হয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি ও রপ্তানি বহুগুণ বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছে তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে। তাই চট্টগ্রাম বন্দরকেও আগামীর বাণিজ্য সম্প্রসারণে প্রস্তুত হতে হচ্ছে বলে জানান চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। এ ধারাবাহিকতায় অক্টোবরে শুরু হচ্ছে বে-টার্মিনাল নির্মাণের কাজ।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বন্দর চেয়ারম্যান এ তথ্য জানান।

তিনি প্রস্তুতি হিসেবে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের পাশাপাশি বন্দরে বেশকিছু টার্মিনাল ও শেড নির্মাণের কথা বলেন।

চবক চেয়ারম্যান বলেন, ‘অক্টোবরে শুরু হচ্ছে বে টার্মিনাল নির্মাণের কাজ। সেখানে বেশ কিছু চ্যানেল তৈরি করা হবে। এমনিতে ওখানের ড্রাফট রয়েছে প্রায় ১২ মিটার। জোয়ার-ভাটা হিসেব করে ১৪ মিটারের জাহাজ ভেড়ানো হবে। বে টার্মিনাল তৈরি হওয়ার পাশাপাশি প্রস্তুত রয়েছে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল এবং বেশ কিছু টার্মিনাল ও শেড তৈরি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে সিঙ্গাপুর বন্দরের মতো আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর।’

চট্টগ্রাম বন্দর আধুনিকায়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বন্দরের সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একসময় বন্দর সদরঘাট ও আশপাশের এলাকা পর্যন্ত ছিল। বর্তমানে তা সম্প্রসারিত হয়ে কক্সবাজারের মাতারবাড়ি পর্যন্ত পৌঁছেছে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ হলে হ্যান্ডলিং করা যাবে ১ লাখ টন ওজনের পণ্যবাহী কার্গো এবং ১০ হাজার টিইইউস কনটেইনারবাহী জাহাজ।’

‘গত এক যুগে বন্দরে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ইউরোপের সঙ্গে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, বহির্নোঙরের আওতা বৃদ্ধি, ভিটিএমআইএস, ডিজিটালাইজেশন, কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের অত্যাধুনিক কী গ্যান্ট্রি ক্রেন সংযোজন উল্লেখযোগ্য। আমাদের এখন লক্ষ্য আঞ্চলিক পণ্য পরিবহনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হওয়া।’

বন্দর ইকুইপমেন্টের দিক থেকে অনেক বেশি সমৃদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘২০২২-২৩ সালে ২টি ৫০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন মোবাইল ক্রেন, ২টি ১০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন মোবাইল ক্রেন, ৬টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন ৩৪টি কিউজিসি এবং ২টি কন্টেইনারে মোভার বন্দরের বহরে যুক্ত হয়েছে। প্রায় ৯১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৪টি ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন বহরে যুক্ত হওয়ায় বর্তমানে ১৮টি গ্যান্ট্রি ক্রেন ফ্লিটে রয়েছে। এছাড়া বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ৬ লাখ বর্গমিটার ইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এ ইয়ার্ডসমূহে কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতা ৪৯ হাজার ১৮ টিইইউস থেকে ৫৩ হাজার ৫১৮-তে উন্নীত হয়েছে । লালদিয়ার চর থেকে ৫২ একর জায়গা উদ্ধার করে সেখানে কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বন্দরে কেমিক্যাল শেড তৈরি করা হচ্ছে এবং মালটিপারপাস কার শেড তৈরি করা হয়েছে।’

চট্টগ্রামবাসীকে কর্ণফুলীকে বর্জ্যমুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরের অনেক বর্জ্য কর্ণফুলী নদীতে পড়ে। এ কারণে নদীর গভীরতা দিন দিন কমছে। অনেক বর্জ্য আমরা সরিয়েছি। এটি প্রাকৃতিক চ্যানেল। আগামী বছরের মধ্যে ১১ মিটার বা সাড়ে ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বন্দর জেটিতে ভেড়ানো সম্ভব হবে আশা করি। এ জন্য নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে। নয়তো চট্টগ্রাম বন্দরে বড় জাহাজ আসতে পারবে না। বড় জাহাজ ভিড়তে না পারলে ব্যবসায়ীরা পরিবহন খরচ কমাতে পারবে না। এতে বেশি দামে জিনিস কিনতে হবে। যা পুরোপুরি চট্টগ্রামবাসীর জন্য ক্ষতি।’

চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের ১০০টি বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের স্থান এখন ৬৪তম। তাই চট্টগ্রাম বন্দরও আন্তর্জাতিক বন্দরের নীতি অনুসারে চলবে। এখানেও প্রাইভেট অপারেটর নিয়োগ হবে তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা যাচাইয়ের মাধ্যমে। একইসঙ্গে নতুন প্রযুক্তি আসবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে। অনেক দেশ আমাদেরকে অনুরোধ করে চট্টগ্রাম বন্দর যাতে তাদের সঙ্গে কাজ করে। এটি খুবই সন্তোষজনক বিষয় যে, বিদেশি অনেক বিনিয়োগকারী চট্টগ্রাম বন্দরে বিনোয়াগ করতে আগ্রহী। অর্থাৎ আমরা সবার আকর্ষণের একটি জায়গায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি।’

মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য শহীদুল আলম, সচিব ওমর ফারুক, পরিচালক (প্রশাসন) মমিনুর রশিদসহ সংস্থাটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

[ad_2]