চাহিদা কমলেও নিত্যপণ্যের দাম চড়া

biplobibangladesh.com

[ad_1]

রাজিব শর্মা »

টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত নগরের অর্ধ শতাধিক এলাকাসহ তার পাশের বিভিন্ন এলাকা। এর কিছুটা প্রভাব পড়েছে সবকিছুতেই। এমনকি বাদ যায়নি নিত্যপণ্যের বাজারও। যদিও দেশের বৃহত্তর ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই- খাতুনগঞ্জে জলাবদ্ধতার তেমন বড় প্রভাব না পড়লেও প্রায় পণ্যের দাম হঠাৎ বেড়েছে। বৃষ্টির কারণে খাতুনগঞ্জে ক্রেতা নেই বললেই চলে। তবুও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া নগরের অন্য বাজারে নিত্যপণ্যেও সংকট না থাকলেও হঠাৎ করে জলাবদ্ধতা ও সরবরাহের কৃত্রিম সংকট ইস্যুতে সব পণ্যের বাজার বেশ চড়া। এতে কষ্টে আছে সাধারণ মানুষ। টানা বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতা দুর্ভোগের কারণে শ্রমজীবী মানুষের আয়ও কমেছে।

বাজারে আসা ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, জলাবদ্ধতায় চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের নিত্যপণ্যের বাজারে তেমন ক্ষতি হয়নি। তাছাড়া পানি উঠলে তা নেমে যায়। হঠাৎ এভাবে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো অমানবিক।

এদিকে বিক্রেতারা বলেন, হঠাৎ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়াতেই প্রায় মালামাল নষ্ট হয়েছে। তাছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মালামাল তেমন আসছে না যার ফলে নিত্যপণ্যের সাময়িক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে দাম বেড়েছে।

মঙ্গলবার সকালে নগরীর চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও রেয়াজউদ্দিন বিভিন্ন বাজার সরেজমিনে দেখা যায়, গত দুদিনের ব্যবধানে আদা, রসুন পেঁয়াজে দাম বেড়েছে মানভেদে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। আমদানির যে মানের পেঁয়াজ গত রোববারও পাইকারি বাজারে ৩১ টাকা বিক্রি করা হয়েছিল তা গতকাল কেজিপ্রতি ১২ টাকা বেড়ে বিক্রি করা হয়েছে ৪১ থেকে ৪৩ টাকায়। আর আমদানির আদা ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে তা গতকাল কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে ১৫৫ থেকে ১৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তাছাড়া গত দুদিন আগেও আমদানির রসুন কেজিতে বিক্রি হয়েছিল ১৭৫ টাকায় তা গতকাল বাজারে বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকার বেশি। এভাবে চাল, ডাল, লবণ, শুকনো মরিচ, হলুদ, আটাসহ প্রায় নিত্যপণ্যের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা।

হঠাৎ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের হামিদউল্লাহ মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিছ বলেন, ‘কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ কম ছিল। তাছাড়া বন্দরে জাহাজ ভিড়তে পারেনি। যার ফলে আজকে (মঙ্গলবার) একটু বাড়তির দিকে। তবে এ পণ্যের দাম বৃদ্ধিকে সাময়িক ধরা যায়।’

চাক্তাইয়ের ফোরকান ট্রের্ডাসের স্বত্তাধিকারি মো. ফোরকান বলেন, ‘পেঁয়াজের গুদামের মাল নষ্ট হয়েছে। তাছাড়া সরবরাহের ঘাটতি রয়েছে। যার ফলে দাম একটু বাড়তির দিকে।

এদিকে রেয়াজউদ্দিনবাজার ও বকসিরহাটে সরেজমিনে দেখা যায়, গত দুদিন আগে যে লেয়ার মুরগির ডিম (লাল) বিক্রি হয়েছিল প্রতি ডজন ১৩৫ টাকায় তা ৩০ টাকা বেড়ে গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। আর এতদিন ধরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল কেজিপ্রতি ১৫৫ টাকায়, তা গতকাল বাজারে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১৭৫ টাকা কেজিতে। পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে সোনালি মুরগি। গতকাল বাজারে সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায় যা গত শনিবারও বিক্রি হয়েছিল ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা কেজিতে।

এছাড়া ভোজ্যতেল সয়াবিন ও চিনির দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও ঐ দামে এমনিতে কোথাও মিলছে না এসব পণ্য। গতকাল বাজারে চিনি বিক্রি হয়েছে ১৩৩ টাকা থেকে ১৩৫ টাকায়, যা সরকার নির্ধারণ দর নির্ধারণ করেছেন ১২০ টাকায়। বাজারে পাম তেল বিক্রি করছে লিটার প্রতি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। যা সরকারের নির্ধারিত দর ছিল ১৩৩ টাকা। সে হিসেবে প্রতি লিটার পাম তেলের দাম বাড়তি নিচ্ছে ২৭ থেকে ৩৭ টাকা।
বক্সিরহাটে নিত্যপণ্যের বাজার করতে আসা টেক্সিচালক মো. হুদা বলেন, ‘হঠাৎ ব্যবসায়ীরা জলাবদ্ধতার ইস্যুতে সকল পণ্যের দাম বাড়তি নিচ্ছে। এভাবে নানা ইস্যুতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর চিন্তা করলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের বাজার আসা যাবে না।’

আলী আহমেদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ‘জলাবদ্ধতা হয়েছে কিছু স্থানে, অথচ কোন পণ্যের তেমন ক্ষতি হয়নি। ব্যবসায়ীরা তাদের মণগড়া দামে পণ্য বিক্রি করছে।কেন দাম বাড়ছে তা জিজ্ঞেস করারও মানুষ এদেশে নেই। ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের দখলে নিত্যপণ্যের বাজার।’

বকসির হাটের ডিম ব্যবসায়ী মো. শাহ আলম বলেন, ‘আজকে থেকে ডিমের দাম বেড়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে কোন ডিম না আসাতেই আড়তদারেরা আমাদেরকে বাড়তি দরে বিক্রি করছে। গত দুদিন আগেও আমরা ডিম বিক্রি করেছি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। তা আজকে ১৬৫ টাকা ডজনে বিক্রি করতে হয়েছে।’

ব্রয়লার মুরগি পাইকারি ব্যবসায়ী মো. মোজাম্মেল বলেন, ‘দেশের যেসব স্থান থেকে মুরগি সরবরাহ করা হতো, জলাবদ্ধতার কারণে ব্যবসায়ীদের মুরগি সরবরাহ সম্ভব হয়নি। তাছাড়া যেসব স্থান থেকে মুরগি কিনেছি তারা চড়া দামে মুরগি বিক্রি করছে। যার ফলে মুরগির বাজার চড়া।’

[ad_2]

Share This Article
Leave a comment